রাজধানীর চকবাজারে পলিথিন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ, শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং লাশ পরিবহন ও দাফন কাজে সার্বিক সহায়তা করতে গতকাল রাতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলোয়ার হোসেন, চকবাজার থানা আমীর আনিসুর রহমান, পল্টন উত্তর থানা আমীর শাহীন আহমদ খান সহ চকবাজার থানার বিভিন্ন পর্যায়ের জামায়াত নেতৃবৃন্দ।
এসময় নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সরকারের ব্যর্থতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণে অগ্নিকাণ্ডের মতো দূর্ঘটনা দেশে বারবার সংঘটিত হচ্ছে। এমনকি চকবাজারের আগুনে পুড়ে যাওয়া পলিথিন কারখানা ভবনেরও অনুমোদন প্রক্রিয়া ও নির্মাণে যথেষ্ট ত্রুটি ছিলো। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষের পরিবারকে কোনো কিছু দিয়েই ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব না। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন ক্ষতিগ্রস্তদের এই পরিস্থিতি উত্তরণে বিশেষ সহযোগিতা করেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্বাবস্থায় দেশের বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। অতীতেও দেশের বিভিন্ন দূর্ঘটনায় আমরা মানুষের পাশে থেকেছি, যা দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। আজকেও এই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের কফিন নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর জন্য ৪টি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ফ্রি লাশ পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে জামায়াত। চকবাজারের পলিথিন গোডাউনে বিষ্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে জামায়াতে ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবকেরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর খোঁজখবর ও তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য জামায়াতের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান চকবাজারে পলিথিন কারখানায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার গুলোর প্রতি সালাম, দোয়া ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিভিন্ন দূর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে একটা তদন্ত কমিটি হয়। এরপরে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এসব দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না। যদি সঠিকভাবে তদন্ত না হয় তাহলে বার বার এমন দূর্ঘটনা সংঘটিত হতেই থাকবে। এজন্য জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানায়, প্রত্যেকটি দূর্ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে পরবর্তীতে তা রোধ করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। চকবাজারের পলিথিন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে যারা ইন্তেকাল করেছেন আমরা তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তিনি আরও বলেন, সকল বিপদ মুসিবতে একমাত্র মহান রবই আমাদের ভরসা। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের উপরে তায়াক্কুল করতে হবে। তিনি যেন আপনাদের এই বিপদে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন। বিপদ-মুসিবত যখন মানুষের উপরে আসে তখন আল্লাহর শিক্ষা হচ্ছে এই বিপদ-মুসিবতে তারা চরম ধৈর্য ধারণ করবে এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইবে। জামায়াতে ইসলামী সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ দেশ গঠন করার স্বপ্ন দেখে। যেখানে সকল মানুষ কর্মের নিরাপদ ক্ষেত্র পাবেন ও সেখানে প্রত্যেকের জান-মাল সুরক্ষিত থাকবে।