বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল গতকাল রাজধানীতে এক রুকন সমাবেশে বলেন, জামায়াত কর্মী মানেই সমাজকর্মী এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আদর্শ সমাজ গঠনে আমাদেরকে নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কেবল একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠন করা সম্ভব। আল্লাহ তায়ালার অসীম সাহায্য করুণা রহমত আমাদের সাথে আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ। জামায়াতে ইসলামীর রুকনদের (সদস্য) সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে মাঠে ময়দানে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু পাড়া-মহল্লায় নয়, রাজধানীর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি গলি, প্রত্যেক বিল্ডিং ও ফ্ল্যাটে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিতে জামায়াতের সকল রুকন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন এই প্রত্যাশা রাখছি।
তিনি গতকাল ১৯ জুলাই ২০২২ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মতিঝিল পূর্ব থানার উদ্যোগে আয়োজিত ষান্মাসিক রুকন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য ও মতিঝিল পূর্ব থানা আমীর নূর উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং মতিঝিল পূর্ব থানা সেক্রেটারি মো. নাজিম উদ্দিন এর পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর ড. মোবারক হোসাইন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও মতিঝিল-শাহজাহানপুর জোন সহকারী পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল হক, মতিঝিল পূর্ব থানার শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য জসিমুল হক পাটোয়ারী, আমিরুল মোমেনীন তালুকদার, দেলোয়ার হোসাইন, মো. হুমায়ুন কবির সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশ ও মানবতার কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশে বন্যা কবলিত সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম সহ সারাদেশের সাধারণ মানুষ তার স্বাক্ষী। আমরা যারা সংগঠনের রুকন আছি, তাদের বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে এই ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে ইসলামী আন্দোলনের মজবুত দূর্গ হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। এই এলাকায় বসবাসকারী সকল মানুষের কাছে আমাদের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেওয়া মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ হতে আমানত। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন রুকন (সদস্য), আল্লাহর গোলামী করার জন্য আমরা আত্ম-নিবেদিত। এজন্য কুরআনের বিধানের আলোকে নিজেকে তৈরি করে দেশ সমাজ ও জাতি গঠনে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। দেশের মানুষের প্রয়োজনে আমরা ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজেদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে চেষ্টা করবো। যা দ্বারা সাধারণ মানুষ আরও বেশি উপকৃত হবেন।
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, জামায়াতের রুকন হিসেবে নিজেকে নৈতিকভাবে ও সাংগঠনিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করে নিজের যোগ্যতা-দক্ষতাকে শাণিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য কুরআনিক যে শর্ত রয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব হয়। এভাবেই মানসম্পন্ন ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়ার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার কল্যাণ সাধন করার যোগ্যতা অর্জন করার পাশাপাশি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার লক্ষ্যে নিজেদের যাবতীয় কর্মতৎপরতা বজায় রাখতে হবে। তিনি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে ঈমানদারদেরকে সকল বিভ্রান্তির মোকাবেলায় একটি ভারসাম্যপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করে ভূমিকা রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।
ড. মোবারক হোসাইন বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জাতি গঠন, মানুষের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী ইসলামের আদর্শের ভিত্তিতে এমন একটি সুখি সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে কল্যাণ রাষ্ট্রে অধিকার প্রাপ্তির জন্য সংগঠনের রুকনদের আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে।
সৈয়দ সিরাজুল হক বলেন, আল্লাহর দেওয়া বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমেই প্রকৃত কল্যাণ নিহিত রয়েছে। জামায়াতের রুকনদের চিন্তাধারা হওয়া উচিৎ, আল্লাহ যেন এই দেশকে স্বাধীন, স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকে, কোন মুশরিকের অধীনে যেন না যায়। আমরা যেন মন ভরে আল্লাহর গোলামী করতে পারি।