তথাকথিত গণকমিশন কর্তৃক দেশের শীর্ষ আলেম ওলামার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তান ফুলবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি আজ ১৭ ই মে মঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে এডভোকেট ড. মোঃ হেলাল উদ্দিন ও মু. দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, আমিনুল ইসলাম, ড. মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি মু. আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ, এছাড়াও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, তথাকথিত গণকমিশন কর্তৃক প্রকাশিত শ্বেতপত্রে দেশের শীর্ষস্থানীয় ১১৬ জন আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে যেসব অশালীন মন্তব্য ও ধৃষ্টতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দেশের বরেণ্য এসব আলেম-ওলামা ও মাশায়েখদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা মূলত ইসলাম ও দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্য জনগণ জানতে চাই। ওয়াজ মাহফিল দেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি। ওয়াজ মাহফিল শান্তি-সমৃদ্ধি, আদর্শ সমাজ গঠন ও সমাজসংস্কারের অন্যতম মাধ্যম। সমাজের সব অনাচার, অন্যায় ও ভুল থেকে ফিরিয়ে মানুষকে সৎ পথে ও কল্যাণের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে ওয়াজ মাহফিল। এ সংস্কৃতি ধ্বংস করতে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা আর যাই হোক দেশপ্রেমিক হতে পারেন না। সেই সাথে আমরা বলতে চাই মৌলবাদী তৎপরতা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, অনিয়ম, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের সাথে এদেশের আলেম-ওলামাদের কখনো কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং এখনো নেই। দেশের আলেম সমাজ সর্বদাই দেশ ও জাতির পক্ষে। তাঁরা ঈমান, ইসলাম, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ইসলামী সংস্কৃতির পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা বুঝতে পারছি ইসলাম ও ওলামা-মাশায়েখদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও আশকারায় একশ্রেণীর কথিত বুদ্ধিজীবী মহল শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের তৌহিদী জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ড. মাসুদ বলেন, দেশে আইন-আদালত থাকতে গণকমিশন গঠন করা দেশের সংবিধানবিরোধী কর্মকান্ড। নাকি দেশের সংবিধান কোন একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা দলের এককেন্দ্রীক সম্পদ। দেশের ১১৬ জন ওলামায়ে কেরামের তালিকা করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দেওয়ার এখতিয়ার এই কমিশনের নেই। যাঁরা তালিকা তৈরি করেছেন, তাঁরা নিজেরাই বিভিন্ন অন্যায় অপরাধে অপরাধী ও নিজ পরিবার হতেই তিরস্কৃত। আমরা বুঝতে পারছি দেশবিরোধী একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করতে তথাকথিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশনের নামে নতুন চক্রান্তে মেতেছে। এমতাবস্থায় ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণকে নিরব বসে থাকলে চলবে না। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকার রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে এজন্যই দেশের জনগণের প্রতি তাদের কোন ভালবাসা নেই। দেশের এমন নাজুক পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার বিরোধী দল মত দমন করার মত হঠকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত হচ্ছে না। বরং ধারাবাহিক ভাবে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, হয়রানী, মিথ্যা মামলা দিয়ে, কারাগারে আটক রেখে আবারো দেশে ভোট ডাকাতির পরিবেশ তৈরি করছে। আমরা সাধারণ মানুষের পক্ষে দাবী জানিয়ে বলতে চাই এসব মিথ্যা মামলা, হামলা, অপরাজনীতি বন্ধ করুন। তিনি দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ এই সরকারকে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার প্রয়োজনে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্থান্তর করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে আহবান জানান। অন্যথায় শ্রীলংকার রাজা পাকসে সরকারের পরিণতি বরণ করতে হবে বলে সতর্ক করেন। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ব আহবান জানান।