বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও ইসলামকে নিয়ে বারংবার কটুক্তি ও অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করা হচ্ছে। যা কোন ভাবেই একজন মুসলমানের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। অপরদিকে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়ে ভোলায় প্রতিবাদকারী তৌহিদী জনতার সমাবেশে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে ৪ জনকে শহীদ ও অসংখ্য ব্যাক্তিকে আহত করেছে। গুলি বর্ষন করে হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে একপেশে বক্তব্য প্রদানে দেশের মানুষ হতবাক ও বিস্মিত হয়েছে। তিনি মূল অভিযুক্তদের আড়াল না করে সরকারকে অবিলম্বে আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) এবং ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবী জানান। এ জন্য অনতিবিলম্বে প্রয়োজনে সংসদে আইন পাস করে তা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে “ভোলার ঘটনায় শহীদদের শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায়” আয়োজিত দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দেলওয়ার হোসেন, এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন, শাহীন আহমদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শতকরা ৯০% মুসলমানের বাংলাদেশে বিশ্ব মানবতার শান্তির দূত হযরত মুহম্মাদ (সা.) ও ইসলামকে নিয়ে একটি মহল একেরপর এক অবমাননাকর কটুক্তি করে যাচ্ছে। আল্লাহ ও রাসূলকে কটুক্তির প্রতিবাদ করলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। প্রশাসনের দায়িত্বশীল একটি বাহিনীর কাছে এরকম নিষ্ঠুরতা স্বাধীন দেশের জনগণ প্রত্যাশা করেনি। এ ঘটনায় মনে হচ্ছে যে, আমরা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশের নাগরিক নয় বরং আমরা কোন অমুসলিম রাষ্ট্রে বসবাস করছি। তিনি অবিলম্বে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এই নিষ্ঠুরতার পেছনে দায়ী ব্যক্তিবর্গকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। সেই সাথে এই ঘটনায় নিহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবী জানান।
তিনি আরোও বলেন, বর্তমান সরকার আল্লাহর রাসূলের সম্মান রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তারা হিন্দুত্ববাদী এবং ইসলাম বিরোধী বিবর্তনবাদ শিক্ষা প্রদান করে মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মহীন করার ষড়যন্ত্র করছে। যা কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করতে পারে না। তিনি ধর্মহীন এই শাসন ব্যবস্থায় নিজেদের ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকতে সকল রাসুল প্রেমিক জনগনকে কুর’আন ও সুন্নাহর আলোকে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহবান জানান।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, দেশের প্রতিবাদী নবীপ্রেমী মানুষের রক্তে সরকারের হাত আজ রঞ্জিত। বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার ক্ষত না শুকাতেই ভোলায় নবীপ্রেমিক জনতাকে হত্যা করে সরকার তার দেশবিরোধী চুক্তি সমূহকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। বর্তমান জুলুমবাজ সরকার কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার নিজেদের অপকর্ম, দুর্নীতি ঢাকার যে মরণপ্রাণ প্রচেষ্টা করছে তারই অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তিনি সরকারকে দেশ ও জনগনের স্বার্থের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে দেশ বিরোধী সকল চুক্তি বাতিল করার এবং সেইসাথে ভোলার এই নির্মম ও ন্যাক্কারজনক হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার, আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও তৌহিদী জনতার নামে মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে নুরুল ইসলাম বুলবুল ভোলার ঘটনায় শাহাদাত বরণকারী রাসূল প্রেমিকদের রূহের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থ্যতা কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে বিশেষ দোআ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।