বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ঈদুল আযহা মানুষকে ত্যাগ ও কুরবানীর আর্দশে উজ্জীবিত করে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে একটি শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য অনুপ্রেরণা দেয়। আল্লাহ তাঁর খাঁটি মুমিন বান্দাকে ত্যাগ ও কুরবানীর মাধ্যমে পরীক্ষায় অবতীর্ণ করে যাঁচাই-বাছাই করেন। মুলত চরম জুলুম-নির্যাতন ও প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যেও একজন মুমিন বান্দা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ধৈর্যের সাথে সামনে এগিয়ে যাবেন আর এটাই হলো কুরবানীর প্রকৃত শিক্ষা। সুতরাং আল্লাহর দ্বীন কায়েমের পথে জান ও মালের কুরবানী করে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
শনিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী থানা আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বুলবুল একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা আমীর মোঃ শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা সেক্রেটারি আবদুল করিম, সদস্য এম আর মালেক, আবু সাইম, মোশাররফ হোসাইন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, কুরবানীর শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নিজেকে প্রস্তুত এবং সে অনুযায়ী ভূমিকা পালন করা মুমিনের কর্তব্য। সূরা ইমরানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন- মুমিনগণ ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, অনুগত, আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয়কারী এবং শেষরাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। আমাদেরকে মুমিনের গুনাবলী অর্জন করে আল্লাহর প্রকৃত বান্দাহ হিসেবে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ অর্জন করতে হবে। তিনি দেশের বর্তমান অবস্থায় উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পুর্ন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের অদক্ষতায় মহাসড়ক গুলোতে প্রচন্ড যানজটের ফলে ঘরমুখো মানুষের হয়রানী এবারের ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। চামড়া শিল্পে সরকারের অব্যবস্থাপনার ফলে কুচক্রী মহল পরিকল্পিত ভাবে দেশের চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে ডেংগু পরিস্থিতি সারাদেশে ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ভূখন্ড দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এমতাবস্থায় দেশের এই ক্রান্তিকালে জামায়াত কর্মীদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজসেবায় আরও জোড়ালো ভূমিকা পালন করতে হবে। সেইসাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে যে কোন ত্যাগের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরকে সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা দান সম্বলিত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং প্রশাসনিক বিভক্তিকরণের মাধ্যমে ভারত সরকার নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। সরকারের দ্বারা সেখানে মানবতা লঙ্ঘনের মহোৎসব চলছে। আজ কাশ্মীরের জনগনের ঘরে খাবার নাই, হাসপাতালে চিকিৎসার ঔষধ নাই, গণগ্রেফতারের ফলে কারাগারে তিল ধারণের জায়গা নাই। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার কাশ্মীরে স্মরণকালের যে পৈশাচিক-অমানবিক নির্যাতন ও মুসলিম নিধন চালাচ্ছে তা কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না।
অনতিবিলম্বে কাশ্মীরের মুসলমানদেরকে ঘিরে সকল অন্যায় ও দমনপীড়নমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত হয়ে কাশ্মীরী জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি ভারত সরকারের প্রতি দাবী জানান। সেইসাথে কাশ্মীরের জনগনের উপর নির্যাতন বন্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য মুসলিমবিশ্বসহ সকল শান্তিকামী রাষ্ট্রের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।