বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহঃ সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ঈদুল আযহা মানুষকে ত্যাগ ও কুরবাণীর আদর্শে উজ্জীবিত করে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও শোষণ দূর করে একটি শোষণমুক্ত ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য ত্যাগ স্বীকারে অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যদি ত্যাগের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলেই বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে পারি তাহলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ধানমন্ডি থানার উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও ধানমন্ডি থানা আমীর এডভোকেট জসীম উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঈদ পুনর্মিলনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন হাজারীবাগ উত্তর থানা আমীর আব্দুর রহমান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা এমন এক সময় পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করেছি যখন ডেঙ্গু জ্বর ও বন্যার কারনে দেশের মানুষের পক্ষে ঈদের আনন্দ যথাযথভাবে উৎযাপন করা সম্ভব হয়নি। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গু এমন এক রোগ যা শুধু চিকিৎসা দ্বারা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বিত উদ্যোগ। অথচ সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের অভাবে দেশে ডেংগু পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে এবং সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। অন্য দিকে দেশের ভয়াবহ বন্যায় দেশের মানুষের কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় ঈদুল আযহার শিক্ষা ও হযরত ইব্রাহীম আ. এর ত্যাগের আদর্শকে ধারণ করে তিনি জামায়াত কর্মী সহ দেশের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের অসুস্থ ও বন্যার্ত অসহায় মানুষের দিকে সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করার জন্য আহ্বান জানান।
বর্তমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে, ক্ষমতাসীনরা দেশের ভুখন্ড আজ প্রতিবেশী দেশের হাতে তুলে দেওয়ার পায়তারা চলছে। জাতির ঘাড়ে চেপে বসা ফ্যাসিবাদী সরকার অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে আধিপত্য শক্তির উপর ভর করে দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। সরকারের দ্বারাই বারবার জনসাধারনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, নারী-শিশু নির্যাতন, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে দেশে সকল অন্যায় কর্মকান্ড সরকারের ছত্রছায়ায় ও তাদের লালিত পালিত ব্যাক্তিদের মাধ্যমেই বেশি সংঘটিত হচ্ছে। ফলে আওয়ামীলীগ সরকার জনগন থেকে এখন পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, ভারত জোরপূর্বক অস্ত্রের বলে কাশ্মীরকে জুলুমের রাজ্যে পরিণত করেছে। বর্তমানে ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরে স্মরণকালের যে পৈশাচিক-অমানবিক নির্যাতন ও মুসলিম নিধন চালাচ্ছে তা কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পেছনের আসল উদ্দেশ্যে হচ্ছে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ‘ডেমোগ্রাফি’ বা জনসংখ্যাগত চরিত্র বদলে দেয়া। জম্মু-কাশ্মীরে মুসলমানদের অস্তিত্ব বিলিন করে আরেকটি ফিলিস্তিন তৈরির মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ভারতীয় সরকার। এ অবস্থায় বিশ্ববাসী কিছুতেই চুপ থাকতে পারে না। তিনি কাশ্মীরের জনগনের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য মুসলিমবিশ্ব সহ সকল শান্তিকামী রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।