বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথে আওয়ামীলীগের নির্মম ও পৈশাচিক হত্যাকান্ড বিশ্বের সকল নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে। মানবতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেশকে ফ্যাসীবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য ২৮ অক্টোবর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। অথচ বর্তমান সরকার সেই নৃশংস ঘাতকদের বিচার না করে তাদেরকে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। যা সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি। বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে আদালত থেকে খুনিরা ছাড় পেলেও জনতার আদালতে তাদের কোন রেহাই নেই। এই জালিম ও স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পল্টন ট্রাজেডির শহীদদের রক্তের বদলা নেয়া হবে।
তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২৮ অক্টোবরের নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডে শহীদদের স্মরণে ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভপতির বক্তব্যে একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরোও বক্তব্য রাখেন বাংলাদশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য আমিনুর রহমান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ২৮ অক্টোবরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং এটি ছিল দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে সাংবিধানিক ও আইনের শাসনের পরিবর্তে দেশকে ফ্যাসীবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্যই লগি-বৈঠা দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে নারকীয় তান্ডব চালায় এবং ২৮ অক্টোবর পল্টনে ৬ জন নেতাকর্মীকে রাজপথে পিটিয়ে হত্যা করে দানবীয় উল্লাসে মেতে ওঠে। তারা শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং শহীদদের লাশের উপর নৃত্য করে। যা আধুনিক সভ্যসমাজে মধ্যযুগের বর্বর তাতারীদের ধ্বংসের নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, ২৮ অক্টোবরের শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশ থেকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, মতামত প্রকাশে বাধা, সংবাদপত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করে দেশে একদলীয় ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসন চালু করেছে। সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার পরিবর্তে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে একে একে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সরকারের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, ২৮শে অক্টোবর শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেদিনের লগি-বৈঠার তান্ডবের কথা মনে হলে বিবেকবান মানুষের গা শিউরে উঠে। ২০০৬ সালের এ দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে নারকীয় উল্লাসে মেতে উঠেছিল আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট। মিডিয়ার সুবাধে আওয়ামী বিভৎষতা, ভয়ানক তান্ডব আর পাশবিকতা প্রত্যক্ষ করেছিল বিশ্বের মানুষ। আওয়ামী নিষ্ঠুরতা সে দিন পাশবিকতায় সীমারকেও হার মানিয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসের এই বর্বরতম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের এখনো বিচার করা হয়নি। তিনি অবিলম্বে খুনীদের বিচারের আওতায় আনার আহবান জানান।