বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, সত্য ও মিথ্যার আদর্শিক লড়াই পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকেই চলে আসছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। এ লড়াই চিরন্তন ও শ্বাশত। যুগে যুগে বিভিন্ন জাতির আন্দোলন-সংগ্রামে, উত্থান-পতনে ও সফলতা-ব্যর্থতার অগ্রভাগে যে জিনিসটি প্রতীয়মান হয়েছে তা হলো, ঐ জাতির নেতৃত্ব ও কর্মীবাহিনীর মধ্যে আদর্শিক দৃঢ়তা ও মূল্যবোধের বিষয়টি। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের স্মরণ রাখতে হবে, ইসলামকে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিজয়ী করতে হলে সর্বাগ্রে নিজেদের কর্ম ও চরিত্রে ঈমান ও আমলের দৃঢ়তা নিয়ে আসতে হবে। আর মাহে রমজান আমাদেরকে সেই দৃঢ় ঈমান ও তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষন দিয়েছে। তিনি সকলকে রমজানের শিক্ষাকে বছরের বাকি সময়ে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি ও সমাজ পুণর্গঠন এবং ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পল্টন থানার উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও পল্টন থানা আমীর মোঃ আমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মোস্তফা জামাল, আতিকুর রহমান নজরুল, মোঃ ওমর ফারুক, এ্যাড. সুলতান আহমেদ, আ ফ ম ইউসুফ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। মেধাবী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে। সমগ্র জাতি টেলিভিশনের মাধ্যমে সেই মর্মান্তিক দৃশ্য অবলোকন করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নির্দেশে ছাত্রলীগের হামলা প্রমান করে ইতিপূর্বে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়াটা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তামাশা। বর্তমান সরকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ইতিহাস সাক্ষী ছাত্রসমাজের রক্ত ঝরিয়ে কোনো স্বৈরশাসক বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। তিনি অবিলম্বে যুক্তিসঙ্গত ও নায্য দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং আহত শিক্ষার্থীদের সুস্থতা কামনা করে তাদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রচলিত সংস্কৃতিকে কলুষিত করে আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রবিনাশী আরেকটি প্রতারণার নির্বাচন উপহার দিলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরাসরি সহায়তায় ভোট ডাকাতির লেটেষ্ট মডেলের নির্বাচন গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হলো। যা দেশে-বিদেশে কলঙ্কিত নির্বাচনের আরেকটি ইতিহাস হয়ে রইল। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হল যে, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন প্রকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।