কুরআনের সমাজ বিনির্মানের মাধ্যমে সোনার মদিনার মতই সোনার বাংলা গঠন করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যেই সমাজ ব্যবস্থায় মদিনায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেই সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই বাংলাদেশেও শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। সোনার মদিনা গঠনের আগে মহানবী (সা.) সোনার মানুষ তৈরি করেছে। সোনার বাংলা গঠনের জন্য জামায়াতে ইসলামীতে অসংখ্য সোনার মানুষ রয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম হচ্ছে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির অসংখ্য মানুষকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে সোনার মানুষ হিসেবে তৈরি করেছে। যার প্রমাণ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ সহ শত-শত জনগণের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যাদের দায়িত্ব পালনে এক পয়সা দুর্নীতি অভিযোগ আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি। কারণ যাদের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় আছে তারা জনগণের সম্পদ লুট করে না, করবেও না।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) লালবাগ পশ্চিম থানা ২৩ নং ওয়ার্ড আয়োজিত বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনে যাকাতের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মদিনা সনদে দেশ পরিচালনার কথা বলে আওয়ামী লীগ জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে, ইসলাম নিয়ে ঠাড্ডা করেছে মন্তব্য করে ড. মাসুদ বলেন, আওয়ামী লীগের মতই যারা নিজস্ব মতবাদে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে এবং করবে তারা জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে এবং আগামীতেও দিবে। মানুষের তৈরি আইনে শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের উপকার হয়, জনগণের নয়। বরং তারা জনগণকে চুষে খেয়েছে আগামীতেও আরেক দল খেতে বসে আছে। তাই ইসলামী সমাজ বিনির্মানের মাধ্যমে জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রমাদান কুরআন নাযিলের ও বিজয়ের মাস। এই রমাদানের শিক্ষায় বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থায় কুরআনের শাসন কায়েমের মাধ্যমে কুরআনের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
লালবাগ পশ্চিম থানা আমীর মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাবে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক বিশিষ্ট সমাজসেবক এফবিসিসিআই’র পরিচালক হাজী হাফেজ এনায়েত উল্লাহ বলেন, ইসলামের কথা বললেই জঙ্গি আর মৌলবাদের ট্যাগ লাগানো হতো। পারিবারিক বৈঠক থেকেও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের আটক করে নিয়ে দেশ বিরোধী গোপন বৈঠক থেকে আটক করা হয়েছে বলে জুলুম নির্যাতন চালানো হয়েছে। জনগণ থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে তারাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আগামীতেও আওয়ামী লীগের পথে যারা হাঁটবে, তাদের পরিণতি আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ হবে। আগামী নির্বাচন হবে অতীতর সকল নির্বাচনের মধ্যে কঠিন এক নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন হবে বাতিল ও হকের মধ্যে লড়াইয়ের নির্বাচন। এই নির্বাচনে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে এদেশের জনগণের উপর আবারো ভারতীয় আধিপত্য বিস্তার করবে। ইতোমধ্যে সেই আলামত দেখা যাচ্ছে। ভারত আওয়ামী লীগকে হারিয়ে এখন আরেক দলকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে এদেশে ভারতীয় আধিপাত্যবাদ কায়েমের চেষ্টা করছে। জনগণ সজাগ থাকলে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে সকল অপশক্তি, পরাশক্তি পরাজিত হবে। তিনি দেশবাসীকে জামায়াতে ইসলামীর পতাকা তলে আসার আহ্বান জানান।
লালবাগ পশ্চিম থানার সেক্রেটারী শহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন লালবাগ-কামরাঙ্গীচর জোন পরিচালক মো. আব্দুর রহমান, লালবাগ পূর্ব থানা আমীর শামীমুল বারী ও লালবাগ থানার সাবেক আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাব্বির আহমেদ। এছাড়াও সভায় লালবাগ পশ্চিম থানার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।