বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মতিঝিল শাহজাহানপুর জোন কর্তৃক আয়োজিত নৈশকালীন ইবাদত ও ইসলামী আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আয়োজিত রাত্রি জাগরণ অনুষ্ঠানটি মতিঝিল শাহজাহানপুর অঞ্চলের পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে এবং শাহজাহানপুর পূর্ব থানার আমির মো. আবু আম্মারের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দারসুল কুরআন পেশ করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। এমসয় আরো উপস্থিত ছিলেন জোনের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারিসহ পাঁচ শতাধিক রুকন ও কর্মীবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাদের কর্মীরা আমাদের কাছে আমানত। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের কর্মীরা গত ২৮শে অক্টোবর চরম বাঁধা প্রতিকূলতার মাঝেও জীবনবাজি রেখে রাজধানীর শাপলা চত্বর মতিঝিল আরমবাগে ছুটে এসে নেতৃবৃন্দের পাশি দাঁড়িছিলেন। রাজপথে জামায়াত শিবিরের কর্মীরা জীবন দিতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। এই নেতাকর্মীদেরকে কুরআনের শিক্ষায় উদ্ভাসিত হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। কুরআনের শিক্ষায় উদ্ভাসিত হয়ে আল্লাহর জমিনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে। বাতিলের সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা করতে হবে। কুরআন এবং হাদীসের আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালনা করার জন্য কুরআন ও হাদিসের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করা যাবে না। এ পৃথিবীতে সবকিছু আল্লাহর ফয়সালা মোতাবেক হয়। আমাদের দায়িত্ব হল সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো। মানুষের জীবনে কল্যাণ ও অকল্যাণ সব আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তাই অপ্রত্যাশিত কোনো কিছু দেখে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। গভীর রাতে ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। আল্লাহ যদি কারো সাথে থাকেন তাহলে তার জন্য দুনিয়ার আর কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। সমাজ দেশ রাষ্ট্রে আল্লাহ যাকে চান তাকে সম্মানিত করেন।
ড. মাসুদ বলেন, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে আজ নির্বাচন কমিশন দিয়ে একতরফার তফসিল ঘোষণা করেছে। এরফলে শুধু বাংলাদেশে নয় গোটা বিশ্ব থেকেও আওয়ামী গোষ্ঠী ও তাদের তাবেদার প্রশাসন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং আরও সংকটে পড়বে বলে জনগণ মনে করে। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন, জনগণের অধিকার হরণের ফলে তারা বহিঃবিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। আগেই ভিসা নীতি সহ বিভিন্ন স্যাংশনের মুখে পড়েছে দেশ। এমতাবস্থায় সরকার নিজেরা বাঁচার জন্য দেশের ১৮ কোটি মানুষকেই বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করে ফেলেছে। তবে দেশপ্রেমিক জনতা জেগে উঠেছে, তারা নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হয়েছে। এদেশের মানুষ এই ফ্যাসিস্ট সরকারের আর কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দিবে না।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস চলছে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম বিপর্যস্ত, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দেশে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে ঘোষিত একতরফার তফসিল প্রত্যাহার করুন, নির্বাচন কমিশনারগণ পদত্যাগ করুন, কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এদেশের জনগণ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই আপনাদের পতন ঘটিয়ে নিজেদের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায় করবে ইনশাআল্লাহ।