৫ জুন রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আজ রোববার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে পেশাজীবী দায়িত্বশীলদের নিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পেশাজীবী দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট এস এম কামাল হোসাইন, সুপ্রিম কোর্ট শাখা সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট এম ইউসুফ আলী, জজ কোর্ট শাখা সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর সাবেক সহ-সেক্রেটারি জেনারেল ইঞ্জিঃ শেখ আল আমিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট গোলাম রহমান ভুইয়া, ঢাকা মেডিকেল সেন্টার এর সভাপতি ডাঃ আবু আফনান, ঢাকা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট শাখার সেক্রেটারি এডভোকেট খন্দকার একেএম রেজাউল করিম, জজকোর্ট শাখা সহ সভাপতি এডভোকেট লুৎফর রহমান, জজকোর্ট শাখা সেক্রেটারি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক ট্রেজারার এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, ঢাকা বিজনেস ক্লাবের সেক্রেটারি ব্যবসায়ী নেতা সগির বিন সাইদ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুস সবুর মাতুব্বর, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করি, দেশের সংবিধান মোতাবেক আমরা সকল কর্মসূচী পালনের অধিকার রাখি। বাংলাদেশের মত একটি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাব-জুডিশিয়াল বিষয়ে না জেনে মন্তব্য করেন এটা খুবই লজ্জার বিষয়। না জেনে জামায়াতের রিট নিয়ে আদালত অবমাননা করার মতো ভুল ও অসত্য কথা বলেছেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ ও ৩৮ ধারা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে একটু পড়ে দেখবার অনুরোধ করছি। সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক সভা সমাবেশ করার অধিকার রাখে। সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের সংগঠন করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানে নিবন্ধন থাকা না থাকার বিষয়ে সেখানে কোনো কথা নেই। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কথা বলা সমীচীন নয়। আজ সাধারণ মানুষের জীবনযাপন দুর্বিসহ হয়ে গেছে। এই অসহনীয় অবস্থায় আমরা জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। দেশের মানুষ এই ব্যর্থ সরকারের কবল থেকে মুক্তি চাই, জনগণ জুলুমবাজদের কবল থেকে মুক্তি চাই। জনগণের মুক্তির জন্য, দেশকে অপশাসন ও দুঃশাসন হতে মুক্ত করতে আগামী ৫ জুন জামায়াতের সমাবেশ ও মিছিল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নে পুলিশ প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছি। সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি সকল পেশার মানুষকে দলে দলে সমাবেশে যোগদান করার জন্য উদাত্ব আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকারের অব্যাহত জুলুম, নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গনতন্ত্র হরণের ফলে আজ ভিসা নীতির মতো ঘটনা জাতির উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর সকল দায়ভার রাতের ভোটে ক্ষমতা দখলকারী এই অবৈধ সরকারের। তারা বুঝতে পেরেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে যদি সামান্যতম নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে কোনো ভাবেই তারা বিজয়ী হতে পারবেনা। এজন্যই তারা নির্বাচনের নামে আরও একটি প্রহসন বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করতে মরিয়া হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গ্রেফতার ও বন্দী করে রেখেছে। অবিলম্বে দেশের মানুষের বিপদ ও দুর্যোগে মানবিক সহায়তা নিয়ে ছুটে চলা আমীরে জামায়াত ডা.
শফিকুর রহমান সহ গ্রেফতারকৃত সকল জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও আলেম ওলামাদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে তাদের মুক্তি নিশ্চিত করা হবে। আমরা আশা করি আগামীকাল ৫ জুন রাজধানীর পল্টনের বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট এলাকায় যে মিছিল ও শান্তিপুর্ণ সমাবেশ করার বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা গুলো আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে। এটা তাদের নৈতিক দায়িত্ব।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা ৫ জুন সমাবেশ ও মিছিল করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে লিখিত আবেদন দিয়েছিলাম। গত ২৮শে মে অনলাইনের মাধ্যমে ও পরে একই কপি ২৯শে মে সুপ্রিম কোর্টের সম্মানিত বিজ্ঞ-আইনজীবীদের মাধ্যমে ডিএমপি কার্যালয়ে স্বশরীরে গিয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ডিএমপি কার্যালয়ের গেট থেকে বিজ্ঞ-আইনজীবী নেতৃবৃন্দকে ফিল্মি স্টাইলে উঠিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রতিবাদ ও নিন্দার মুখে চার ঘন্টা পরে সম্মানিত আইনজীবী নেতৃবৃন্দকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের অনুমতি আবেদন পত্রটিও গ্রহণ করে পুলিশ কমিশনারের অফিসে তা সংরক্ষণের করা হয়। দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে জনগণের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। চাল, ডাল, তৈল, আলু, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ গ্যাস সবকিছুর মূল্য আকাশচুম্বি এবং তা মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। অথচ জনগণের উপরে গণবিরোধী নানা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী ফায়দা লুটে নিচ্ছে। ভোট ডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, দুঃশাসন এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস সহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশ গভীর সংকটে পড়েছে। বর্তমান আওয়ামী সরকার দেশের সার্বিক পরিবেশকে ভঙ্গুর করে দিয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার নানাবিধ ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আওয়ামী সরকার ভীত হয়ে জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও আলেমদেরকে দীর্ঘদিন মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।