বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সন্ত্রাসী দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন ও কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন ও মাওলানা এস রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি তাকরিম হাসান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের উপরে অব্যাহতভাবে জুলুম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোঁটা সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালায়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেতন দেওয়া হয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অথচ এই ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা দেশের ফ্যাসিবাদকে আরও দীর্ঘ করার অপকৌশল। আওয়ামী সরকারের বিরোধী মতকে দমন-পীড়ন ও চক্রান্তেরই অংশ। যা কোনোভাবেই বিবেক-বোধ সম্পন্ন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দ্বার্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, এই আওয়ামী অপশক্তি ও সন্ত্রাসীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার মত হিম্মত ও শক্তি আমাদের রয়েছে। কিন্তু আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিশ্বাসী। সরকারের উস্কানীর কারণে পরিস্থিতির অবনতি হলে সরকারকেই এর যাবতীয় দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। ভোট ডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, দুঃশাসন এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশ গভীর সংকটে পড়েছে। এমতাবস্থায় দেশের মানুষের মুক্তির জন্য কেয়ারটেকার সরকারের মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত হয়ে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। সারাদেশে জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মীকে গুম ও নিখোঁজ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে বছরের পর বছর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। অবিলম্বে জামায়াত নেতৃবৃন্দ সহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়ে নেতৃবৃন্দকে মুক্ত করা হবে। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফেরার পথে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানান এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।