বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, দেশে চলমান করোনা ভাইরাসের এই বিপর্যয়কালীন সময়ে মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত নিয়ে অবস্থান করা সামর্থ্যবান সবার নৈতিক দায়িত্ব। করোনার দূর্যোগ কাটিয়ে একে অপরকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে আবার আমরা সবাই মিলে ঘুরে দাঁড়াবো ইনশাআল্লাহ। সরকার যাই করুক আর না করুক, জীবনটা কিন্তু আমাদের। আমরা সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হই; তাহলে অল্পসময়ের ব্যবধানেই করোনার ঢেউ কমে যাবে। আমরা স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ বিভিন্ন ভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ঔষধ সরবরাহ করছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে আমরা ২৪ঘন্টা মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। পাশাপাশি বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা নানাবিধ সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।
আজ শনিবার শাহবাগ থানা জামায়াতের উদ্যোগে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কোভিড-১৯ ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ফুড প্যাকেট বিতরণ কালে এসব কথা বলেন। শাহবাগ থানা আমীর আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে ও থানা বায়তুলমাল সম্পাদক আব্দুল মুনিম খানের সঞ্চালনায় ফুড প্যাকেট বিতরণে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি আবদুল জব্বার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শাহবাগ থানা জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সকল সেবা কর্মসূচি অব্যহত রেখেছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফার অন্যতম দফা হচ্ছে ‘সমাজ কল্যাণ ও সমাজ সংস্কার’ কর্মসূচি। সে লক্ষ্যে সমাজের উন্নয়ন সাধনে জামায়াত নিরলস ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আমরা এখানে আজকের এই ফুড প্যাকেট বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। করোনা মহামারীর এই দূর্যোগ সময়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, যারা ব্যবসা বাণিজ্য সহ আয় উপার্জনের পথ হারিয়েছেন, যাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চাকুরী হারা হয়েছে অনেকে এবং মানুষের স্বাভাবিক আয় ইনকাম সবদিক থেকে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর মত একটি দায়িত্বশীল সংগঠন বসে থাকতে পারে না। গত বছর করোনার শুরু থেকেই আমরা নানা ভাবে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য, সচেতনতা তৈরী করার জন্য বহুবিধ কর্মসূচি পালন করেছি। এবারের দ্বিতীয় বছরের করোনার মধ্যে ঈদকে সামনে রেখে আমরা মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ হতে ৫০ হাজার মানুষের কাছে ফুড প্যাকেট পৌঁছিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি আসন্ন কুরবানী ঈদ উপলক্ষ্যে কমপক্ষে ৩০ হাজার পরিবারের কাছে আমরা কুরবানীর গোস্ত পৌঁছিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ। আমরা স্বাস্থ্য সেবায় সহযোগিতা করার পাশাপাশি মানবিক সহায়তার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ, সেই মহান আল্লাহর কাছে আমাদেরকে ধৈর্য্যের সাথে সাহায্য কামনা করতে হবে। যারা সামর্থ্যবান তাদের সম্পদে যারা অসহায় ও দরিদ্র তাদের অংশ রয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান। সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানাতে চাই জামায়াতের এই করোনা কালীন ফান্ডে সকলে সহযোগিতা করুন। আমরা ঈমানদ্বার আমরা কেবল আল্লাহকেই ভয় করি। সকল ফয়সালা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। এই সময়ে করোনা সহ সকল মহামারী থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আল্লাহর সাহায্য কামনা করা এবং সম্মিলিত মানবিক প্রচেষ্টা ও সহানুভূতির কোন বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে আমরা সেবার মানসিকতা নিয়ে সব সময় মানুষের পাশে রয়েছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী সংগঠন হিসেবে বরাবরই জনগণের যেকোন বিপদ-আপদে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। আর দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই গণমুখী প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের কল্যাণে কাজ করতে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি সহ সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।