বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, “পবিত্র মাহে রমজান মানুষকে আল্লাহভীতি, সংযম, আত্মত্যাগ ও আত্ম উন্নয়নের শিক্ষা দিয়ে যায়। বিশ্ব মানবতার মুক্তি সনদ আল কুরআন নাযিলের কারনেই রমজানের গুরুত্ব-তাৎপর্য অন্যান্য মাস থেকে স্বতন্ত্র। মহাগ্রন্থ আল কুরআন অনুসরন ও অনুকরনের মাধ্যমেই রয়েছে মানব জাতির মুক্তি, কল্যাণ, উন্নতি ও অগ্রগতি।” তিনি সকলকে আল কুরআন অধ্যয়ন ও আমলের মাধ্যমে রমজান মাসকে কাজে লাগানোর আহবান জানান।
তিনি গতকাল রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ হাজারীবাগ থানার উদ্যোগে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথীর বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
হাজারীবাগ থানা আমীর জনাব আব্দুল বারী আকন্দের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুর রহমান এর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথী হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট ড. মু. হেলাল উদ্দিন। অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর্মপরিষদ সদস্য মাও: আব্দুল বাতেন, মামুনুর রশিদ প্রমুখ।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সিয়াম-সাধনার উদ্দেশ্য তাক্বওয়া অর্জন করা। মানুষের হৃদয়ে যদি আল্লাহভীতি থাকে তাহলে তার দ্বারা কোন অন্যায়, অবৈধ বা পাপ কাজ হতে পারে না। প্রকাশ্য ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করার মাধ্যমেই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে পাপাচার ও জুলুমতন্ত্রের অবসান সম্ভব। হক ও বাতিলকে আলাদা করার জন্যই পবিত্র রমজান মাসে সংঘঠিত হয়েছিলো বদর যুদ্ধ। বদরের প্রান্তরে আল্লাহর রাসূল (সা) সাহাবীদের নিয়ে অন্যায় ও বাতিল থেকে ন্যায় ও হককে আলাদা করেছিলেন। আমাদেরকে নিজেদের জীবন থেকে সমস্ত জাহেলিয়াত দূর করে পাপ-পঙ্কিলতামুক্ত জীবন গড়ার শিক্ষা রমজান মাস থেকে গ্রহন করতে হবে।
জনাব ভূঁইয়া আরো বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজানের শেষ দশকে আমরা উপস্থিত। আত্মশুদ্ধি ও আত্মগঠন আমরা কতটুকু করতে পারলাম তার হিসেব কষার সময় এসেছে। রাসূল (সা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহখাতা মাফ করিয়ে নিতে পালোনা তার জন্য ধ্বংস।’ রাসূল (সা) এর এই সতর্কবাণী খেয়াল করে রমজানের বাকী সময় হক আদায় করে ফরজ-ওয়াজিবসমূহ আদায় এবং সাধ্যমত অতিরিক্ত ইবাদত-বন্দেগীর দিকে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে এই দোয়াই করা উচিৎ- তিনি যেন দয়া করে এই রমজানকে আমাদের জন্য নাজাতের উসিলা হিসেবে কবুল করেন। শুধু পানাহার ও কামাচার থেকে বিরত না থেকে আমরা যেন যাবতীয় পাপাচার থেকে নিজের নফস ও প্রবৃত্তিকে বিরত রাখতে পারি সেজন্য প্রতি মুহুর্ত চেষ্টা-সাধনা করা দরকার।
মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা ছিল সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমান জুলুমবাজ সরকার সাধারন মানুষের সে প্রয়োজন পূরণে শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য আজ ক্রয় সীমার বাহিরে। চিনির দাম বেড়েই চলছে। ডাল-সবজির বাজারে আগুন। মাছ-গোশত দিয়ে পেট ভরে ভাত খেয়ে রোজা রাখার অবস্থানে নেই সাধারন মানুষ। রমযানের পবিত্রতা রক্ষার্থে অশ্লীলতা-বেহায়াপনা-নগ্নতা বন্ধ করতে পারেনি সরকার। প্রদর্শনীর ধরণ পরিবর্তন করে তা চলছে নিত্য-নতুন মোড়কে। সরকারের এহেন ব্যর্থতার তীব্র নিন্দা জানান জনাব মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
এ্যাডভোকেট ড. মু. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশ থেকে অন্যায়-অপশাসন ও জুলুমের অবসান ঘটাতে পবিত্র রমজান মাসকে আত্মউন্নয়ন, পরোপকার, কল্যাণচিন্তা ও ইসলামের বাস্তব অনুসরনের মধ্য দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। পবিত্র কুরআনে পাকের বাস্তব অনুসরনের মাধ্যমেই তা সম্ভব। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পবিত্র রমজান মাসেও আইনের শাসন ও মানবাধিকার লংঘন করে চলছে। দেশে গুম-খুন, চাঁদাবাজি অব্যহত গতিতে চলছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ এই সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।