বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়োছিলো। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা দখল করেছে, তখনই এদেশের মানুষের কন্ঠরোধ করেছে। বিরোধী দলমত দমন-নিপীড়ন করা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মূলমন্ত্র। কারণ আওয়ামী লীগ গনতন্ত্র বিশ্বাস করে না, গনতন্ত্র বুঝে না। আওয়ামী লীগ পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী। তার বিশ্বাস করে বাবার পর মেয়ে, মেয়ের পর তার ছেলে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সহ বিরোধী সকল রাজনীতি দলকে রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করে দমন করার চেষ্টা করেছে। জনগণকে রাষ্ট্রের কাছে তাদের ন্যায্য অধিকার চাইতে দেয়নি। যখনই কেউ কথা বলতে চেয়েছে, তখনই খুন, গুম, মিথ্যা মামলা, গায়েবী মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি এমনকি নিজের আবিস্কৃত আয়না ঘরেও বহু নেতৃবৃন্দকে বন্দি করে নির্বিচারে নির্যাতন চালিয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনস্থ এক কনভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাউফল উপজেলার ইউনিয়ন দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল এসব কথা বলেন। বাউফল থানা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, পটুয়াখালী জেলা আমীর মোঃ শাহ আলম, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল আরো বলেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কোন আন্দোলন সফল হয়নি। ছাত্রদের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার বিপ্লব অর্জিত হয়েছে। প্রশাসনের ভিতরে থাকা আওয়ামী লীগের দোসররা কয়েক দফায় এই বিপ্লবের প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করেছে। তবে প্রতিবারই ছাত্র-জনতা সেই অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের রন্ধে রন্ধে আওয়ামী লীগের প্রেত্মারা বসে আছে। তারা ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ করতে নানান রকম ছক আঁকছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘাড়ে বসে তারা ষড়যন্ত্র করছে। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদ্রুত বুঝতে পারবে ততদ্রুতই দেশের জন্য মঙ্গল হবে। নয়ত এরা সরকারকে ব্যর্থ করে ছাড়বে। তবে ছাত্র-জনতাও চুপ করে বসে থাকবে না বলে হুশিয়ারী দেন নূরুল ইসলাম বুলবুল। উপস্থিত দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দায়িত্ব মহান আল্লাহর প্রদত্ত বিশেষ নেয়ামত। তিনি যাকে পছন্দ করেন তাকেই দায়িত্বশীল করেন। সেজন্য প্রয়োজনে দ্বীন কায়েমে নিজের জীবন উৎস্বর্গ করে দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, কোন দেশ সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব নেতৃত্বে সমৃদ্ধ হতে পারে না। অতিতে যারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে, ইচ্ছে মত দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্বের সাথে লিপ্ত ছিল, সেজন্য স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ বাংলাদেশের জনগণ ভোগ করতে পারেনি। আগামীর নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে সন্ত্রাস মুক্ত, দুর্নীতি মুক্ত, চাঁদাবাজ ও দখলদারমুক্ত আদর্শিক নেতৃবৃন্দ। আর সেই আদর্শিক অগণিত নেতৃবৃন্দ রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে, ইনসাফ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জামায়াতে ইসলামী অব্যাহত রেখেছে। বিজয় নিশ্চিত করা পর্যন্ত তিনি জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত রাখতে দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম, উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ সহ দায়িত্বশীলদের ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীর আন্দোলনে শামিল থাকার ঘোষণা দেন।