বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে জুমার নামাজ আদায়কালে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞে গোটা মুসলিম উম্মাহ বাকরুদ্ধ ও শোকাহত। জাতিসংঘের মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষী খুনীদের বিচার করতে হবে। সেইসাথে নিউজিল্যান্ড সরকারকে দেশটিতে বসবাসরত মুসলমান সম্প্রদায়, ইবাদত গৃহ মসজিদ, মাদরাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নিহত মুসলিমদের শহীদ আখ্যায়িত করে তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মুসলমানদের এই শাহাদাতের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ইসলামের পুনর্জাগরণকে তরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক শান্তি মিছিল ও সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর যাত্রাবাড়ি এলাকায় অনুষ্ঠিত এ মিছিল ও সমাবেশে আরোও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মোকাররম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামছুর রহমান, ড. আব্দুল মান্নান, হাফিজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য আমিনুর রহমান, মতিউর রহমান, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, শাহজাহান খান, খন্দকার এমদাদুল হক, মোহাম্মদ আলী, নিজামুল হক, আবদুর রহীম সরকার, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ বনি-আমিন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তোফাজ্জল হোসাইন হেলালি, ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি হাফিজ উদ্দিন, ঢাকা কলেজের সভাপতি মারুফ আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ড. হেলাল উদ্দিন নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর ও লিনউড মসজিদে জুমার নামাজে সন্ত্রাসী হামলা ও বর্বর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দেশ, দল ও ধর্ম নেই। তাদের একটিই পরিচয়, তারা সন্ত্রাসী। কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসীর কাছে শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসী জিম্মি হতে পারে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জাতি, ধর্ম, দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। তিনি অবিলম্বে এ হামলার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবীতে মুসলমানরা আজ ইসলাম বিদ্বেষী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পরিকল্পিত হামলার শিকার। নিউজিল্যান্ডের মসজিদের এই হত্যাযজ্ঞে সন্ত্রাসীরা যে বন্দুক ব্যবহার করেছে তাতে স্পষ্টাক্ষরে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে উগ্র মুসলিম বিদ্বেষী ঘাতক ও ক্রসেডারদের নাম লেখা ছিলো। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয় যে, এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং ইসলাম বিদ্বেষী চক্র পুর্ব-পরিকল্পিতভাবে এই ঘৃণ্য মুসলিম গণহত্যা চালিয়েছে। যা বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের উপর হামলার শামিল। এই হামলা প্রমাণ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদীদের ঘৃণা ও ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতা কতটা নিন্ম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। আগেও আমরা দেখেছি বর্ণবাদীদের ইসলামভীতি তাদের বিকৃত ও খুনে মানসিকতার জন্ম দেয়। এ ধরনের মানসিকতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত। ফলে ইসলাম বিদ্ধেষী বর্ণবাদী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ড. হেলাল ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নৃশংস হামলা পরবর্তী নিউজিল্যান্ড সরকার ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন এর ক্ষমা প্রার্থনা ও গৃহীত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, নিউজিল্যান্ডের যে আইনি শক্তি আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে মুসলমানদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সেইসাথে দেশটিতে বসবাসরত মুসলমান সম্প্রদায়, মসজিদ, মাদরাসা সহ ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। তিনি মুসলিম হত্যাযজ্ঞের দ্রুত বিচার এবং ইসলামবিদ্বেষী উগ্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর মুলোৎপাটন করতে নিউজিল্যান্ড সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
এ হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। তিনি সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল রক্ষা পাওয়ায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে শুকরিয়া আদায় করেন এবং এ ঘটনায় নিহত ৫ জন বাংলাদেশিসহ ৫০ জন মুসল্লির রুহের মাগফিরাত ও আহত ৪৮ জনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।